পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন



এম এ সাত্তার,

পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে গ্রাহকদের। চলিত বছরে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অসহনীয় লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত লাখ লাখ গ্রাহক। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এমন লোডশেডিংয়ের ধারাবাহিকতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা।

একটি সূত্র জানিয়েছে, পল্লী বিদ্যুতের কোন টাইম টেবিল নেই।যুগপৎ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেমতো পরিচালিত হয়ে আসছে পল্লী বিদ্যুৎ। হয়রানি ও ভোগান্তি কি? পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক না হলে বুঝা মুশকিল। চলছে রাত দিন বিদ্যুতের ভেলকি বাজি। সকাল বিকাল বিদ্যুতের কোন হদিস থাকে না। একটানাই চলে লোডশেডিং ৮/১০ ঘন্টা। আবার ২০ মিনিট/ আধাঘণ্টা বিদ্যুৎ দিলেও রাতের আধার নামার আগেই বিদ্যুৎ উধাও। সন্ধ্যা ৬ থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত আট-দশবার লোডশেডিং দেয় পবিস।রাত আট টার পর থেকে এক টানা রাত সাড়ে দশটা অথবা রাত ১১ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকেনা বললেই চলে। 

সন্ধ্যা ৭ থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত এই সময়টা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের জন্য। শিক্ষার্থীরা জানান,এই সময়ে এলাকাতে যেভাবে লোডশেডিং দেখা দিয়েছে এতে তাদের পড়ালেখার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।সদর উপজেলায় বিভিন্ন ধরনের শিল্প ও কল কারখানা রয়েছে। সময় মত বিদ্যুৎ না পাওয়াতে কলকারখানার উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। যেকারণে লোডশেডিং এখন  দূর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি হচ্ছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একটি। 
এরমধ্যে ০৫টি জোনাল অফিস, ১টি সাব-জোনাল অফিস, ২টি এরিয়া অফিস এবং ১৬টি অভিযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সেবা প্রদান করে থাকে। কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নিবন্ধিত হয় ১৯ ডিসেম্বর, ১৯৯২ সালে এবং বানিজ্যিকভাবে বিদ্যুতায়িত হয় ০৫ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ সালে।জেলায় পল্লী বিদ্যুত সমিতির প্রায় সাড়ে তিন লাখের বেশি গ্রাহক রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে তীব্র গরম। গরমের মধ্যে ঘন ঘন এবং টানা লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। অনেক সময় সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। সন্ধ্যার পর যখন কেনাকাটার চাপ পড়ার কথা তখনই বিদ্যুৎ থাকে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত কয়েক মাস ধরেই পল্লীবিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং শুরু হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮ ঘন্টাও থাকছে না বিদ্যুৎ। একদিকে প্রচন্ড তাপদাহ, ভেপসা গরম আবার সেই সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের ব্যাপক লোডশেডিং। প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের এই অসহনীয় লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে মফস্বল এলাকাতে বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গ্রাহকরা।

বিদ্যুৎ গ্রাহক রবি আলম, জহির উদ্দিন , রায়হান, মামুনুর রশিদ, নুরুল ইসলাম জানান, প্রয়োজনের সময় বিদ্যুৎ তো এমনিতেই পাওয়া যায়না, গত কয়েক মাস থেকে নামাজের সময়সহ রাত-দিন দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। এতে করে আমরা চরম দুর্ভোগে রয়েছি।ভেপসা গরমে এই অসহনীয় লোডশেডিং বন্ধ করার দাবি জানান তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকাল ৯টা থেকে ক্লাস শুরুর পর থেকেই বিকাল ৪ টা পর্যন্ত চলে ক্লাস।অথচ এসময়ে মধো আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না।এমন অসহনীয় গরমের মধ্যে ক্লাস করতে হচ্ছে আমাদের।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (সদর দপ্তর-কারিগরী) আদনান আহামেদ চৌধুরী বলেন, বিগত কয়েক মাস থেকে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা শুধু কক্সবাজার নয় বিভিন্ন জেলাতেও একই অবস্থা। এখন আগের তুলনায় তেমন লোডশেডিংয় নেই বললেই চলে। লাইনের কোন সমস্যা থাকলে অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত একটু সমস্যা হয়। তিনি বলেন, যে কারো মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে লোক পাঠিয়ে লাইন ঠিক করে বিদ্যুৎ চালুকরে দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ কয়লা আমদানি করেছে সরকার যে খবর সবাই জানে।দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুতের এই সমস্যা আর থাকবেনা বলে জানান।

Post a Comment

0 Comments